জয়পুরহাটে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুতে লোকসান

মো:আবু মুসা ,জয়পুরহাট: ২–১০-২১
জয়পুরহাটে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুতে লোকসান।জেলায় হিমাগারে সংরক্ষিত আলু সংরক্ষণ খরচের অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে লোকসানে পড়েছেন শত শত কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিক। আলু সংরক্ষণ মৌসুমে হিমাগারের খরচসহ প্রকার ভেদে ৬০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা আলুর খরচ পড়েছে ১ হাজার ৫০টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে সেই আলুর বস্তা অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। কৃষি নির্ভর এ জেলায় হঠাৎ করে আলুর এমন দরপতনে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগারের মালিকরা।
বর্তমান বাজারে প্রতি বস্তা আলু গড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫২০ টাকায়। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বস্তা প্রতি গড়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা। সরেজমিনে জেলার কয়েকটি উপজেলায় হিমাগারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের এ সময়ে ভালো দাম থাকায় প্রতিটি হিমাগারেই সংরক্ষণকৃত আলু বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল শ্রমিক ও কর্মচারীদের। অথচ এবার একই সময়ে হিমাগারে পাইকারদের উপস্থিতি একেবারে নেই।
এলাকার বিভিন্ন হিমাগারে এখন পর্যন্ত সংরক্ষিত আলুর তিন ভাগের এক ভাগও বিক্রি হয়নি। ক্ষেতলালের গোপীনাথপুর পল্লী হিমাগারে সংরক্ষণকৃত ১ লাখ ১৮ হাজার বস্তা আলুর মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার বস্তা। এছাড়া উপজেলার নর্থ পোল, সাউথ পোল, সালামিন ফুডস, আরবি স্পেশালাইস্ট, সড়াইল এম ইসরাতসহ ১০টি হিমাগারের চিত্র একই।
গত মৌসুমে দাম ভালো পাওয়ায় এবার মৌসুমের শুরুতেই আলু বিক্রি না করে অধিক মুনাফার আশায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে বেশি করে আলু মজুদ করেছেন। ফলে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে বস্তা প্রতি যে খরচ হয়েছে বর্তমান মূল্য তার অর্ধেক। ক্ষেতলাল বড়াইলের কৃষক ফজলুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি ৫২ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে রেখেছি। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির কারণে হিমাগার থেকে আলু তুলতে সাহস পাচ্ছি না। শেষ পর্যন্ত আলুর দাম এমন থাকলে লোকসান আরো বেশি হবে, ফলে আলু তোলা সম্ভব হবে না। আমার মত অনেকেই আলু তুলতে আসবে না। হিমাগারে পড়ে থাকবে। কালাই উপজেলার মূল গ্রামের কৃষক আরাফাত বলেন আমি ৮শ বস্তা আলু বিক্রি করে ২ লাখ টাকা লোকসান গুনেছি। এখন যারা আলু বিক্রি করবে তাদের সবারই ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স,ম, মেফতাহুল বারি দৈনিক স্বাধীনমতকে বলেন, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মুনাফার আশায় হিমাগারগুলোতে বিপুল পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করেছে। ফলে বাজারে আলুর দর পতন দেখা দিয়েছে।