শীতের কুয়াশায় হাতীবান্ধায় ধুম পরেছে চোরাকারবারির,ফসল নিয়ে চিন্তায় কৃষক ও জনসাধারণ

মোস্তাফিজুর রহমান লালমনিরহাট:লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল ইয়াবা, গরু-ছাগল ও শাড়ি কাপড় নিয়ে আসছেন চোরাকারবারিরা। এতে করে সীমান্ত এলাকার ব্যাপক ফসলি জমির ফসল নষ্ট করে ফেলছেন তারা।এই চোরাকারবারিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কৃষক ও গ্রামবাসী। তবে তাদের অত্যাচার নিরবে সহ্য করছে ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে মুখ খুললে দেওয়া হচ্ছে হুমকি ধমকি।জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারিরা ভারত থেকে প্রতিদিন মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গরু, ছাগল ও শাড়ি কাপড় নিয়ে আসে।
৩০টিরও বেশি সিন্ডিকেট এই চোরাকারবারি সাথে জড়িত। এক একটি সিন্ডিকেটে ৮০ থেকে ১০০জন কাজ করেন।রাতের আধারে ভারতীয় কাটাতারের বেড়ার নিকট যায়চোরাকারবারিরা। গরু, ছাগল ও তার সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ে ফেরার পথে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি করেন তারা। অনেক মানুষ ও গরু-ছাগলের হাঁটা হাটির কারনে তামাক, বাদাম, ধান, ভূট্টা আলু ও সবজি ক্ষেতের ব্যপক ক্ষতি হয়।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের বিচার দিয়েও কোন সুফল পায় না ভুক্তভোগী কৃষকরা।
এছাড়া এ নিয়ে মুখ খুললে দেওয়া হচ্ছে হুমকি ধমকি।খোঁজ নিয়ে জানা যায় গোতামারী সীমান্তে চোরাকারবারি সাথে জড়িত হলেন, আলিফ, সৃজান, কানা রতন, সুজন, সাদেকুল, মজিদ, বুলেট, আলম, মতিয়ার,সাহাজুদ্দিন,রবি,জাহাঙ্গীর,কাল্টু,জাহিদসহ আরও অনেকে।সরেজমিনে গোতামারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গরু ও চোরাকারবারি চলাচলের ফলে ফষলী জমির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের তামাক, বাদাম, ধান, ভূট্টা আলু ও সবজিসহ অনেক ফষল নষ্ট হয়ে গেছে। এ সময় ভুক্তভোগীরা বলেন, চোরাকারবারিরা গরু নিয়ে আসার ফলে ফষলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে নষ্ট হয়ে যাওয়া ফষল নিয়ে চেয়ারম্যানের নিকট বিচার চাইতে গেলে। চেয়ারম্যান বলছেন থানায় অভিযোগ করতে।ভুক্তভোগী কৃষক মজিবর বলেন, চোরাকারবারিরা আমার আলু ক্ষেতের উপর দিয়ে গরু নিয়ে গেছে। এতে আমার ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পূরণ বাবদ আমাকে সৃজান ২ হাজার টাকা জোর করে দিয়ে গেছে।
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আজনা বেগম বলেন, আমার আলু ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি করেছে চোরাকারবারিরা। এ নিয়ে কোন কথা বললে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।একই কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মহির, জাকারিয়া, সফিকুল, হাফিজার, হযরত আলী, এখলাস, মোহাম্মদ আলী, আয়নাল,শাহজাহান আলী,আঃমান্নান, জয়লানসহ আরও অনেকে।একটি সুত্র জানান, চোরাকারবারি নিকট থেকে টাকা তোলেন পুলিশের লাইনম্যান। আর যে টাকা দেয় না তার গরু প্রসাশনকে ধরিয়ে দেয় লাইনম্যান। গোতামারীতে লাইনম্যানের দায়িত্বে আছেন মোতালেব ও তার ছেলে ভূট্টু। এই বাপ-ছেলে চোরাকারবারির নিকট থেকে গরু প্রতি ৯শত ২০টাকা নেয়। আর সেই টাকা বিভিন্ন জনকে ভাগ করে দেয়। আর গোতামারী ইউনিয়নের যেদিন যে ওয়ার্ড দিয়ে চোরাচালান আসবে সে দিন ইউপি সদস্য টাকা পায়।
এ বিষয়ে পুলিশের লাইনম্যান মোতালেব বলেন, ফোনে কথা বলতে চাই না। আপনারা রেকোর্ড করেন। দইখাওয়া আসেন দেখা হবে। আর গরু বেশি একটা আসে না।এ বিষয়ে চোরাকারবারি রতন বলেন, আগে গরুর ব্যবসা করতাম। এখন বাদ দিয়েছি। আমার কোন গরু আসছে না। এ বিষয়ে সৃজান বলেন, আমি গরুর ব্যবসা করি না। আর কাউকে কোন ক্ষতি পূরণ দেই নাই। আরেক ব্যবসায়ী আলিফ বলেন, আমি ব্যবসা করি না। আপনার কি করার আছে করেন।
এ বিষয়ে গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম সাবু মিয়া বলেন, লাইনম্যান আছে কি না আমার জানা নেই। আর আমি কোন টাকা নেই না। তবে চোরাকারবারি অত্যাচারে কৃষকরা অতিষ্ঠ এই বিষয় নিয়ে আমি আইন-শৃঙ্খলার সভায় বার বার অবগত করি।এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, পুলিশের কোন লাইনম্যান নাই। আর মোতালেব ও ভট্টুকে আমি চিনি